HONEST নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা একটা বিরাট সমস্যায় পড়েছি। এটা আমাদের মাথায় ছিল না। আমরা আমাদের পেইজে যখন কিছু প্রডাক্টের ছবি দিলাম,বিশেষ নতুন পণ্য, যেগুলোর অনেকগুলো এখনো তৈরিই হয়নি, তখন কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে লাগলো। আমরা ইনবক্সে প্রাইজ কত এ জাতীয় প্রশ্ন পেতে লাগলাম। উত্তরে আমাদের খরচ কত পড়তে পারে, তার উপর লাভ ধরে বিক্রয় মূল্য কত হতে পারে এমন একটা আনুমানিক দাম ও তাঁদের জানিয়ে দিলাম। । যা বাজার মূল্যের চে’ কম। তখন দেখা গেলে প্রি বুকিং অর্ডার আসছে, এবং প্রতিটা অর্ডার কয়েকটি করে, এমন কী ডজনের অর্ডার?? আমরা প্রাথমিক ভাবে খুশি হলাম। কিন্তু তারপর মনে হলো, একজন এতগুলো অর্ডার দিচ্ছেন কেন? আমাদের যারা লক্ষ্য, ছাত্র-ছাত্রী, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত তাঁরা একসাথে এতগুলো টি শার্ট,প্যান্ট, টাই , শাড়ি, অলংকার, চশমার ফ্রেইম কিনবেন কেন?? তাঁদের তো এত সামর্থ্য থাকার কথা নয়। আমরা ব্যাপারটি পরীক্ষা করে দেখলাম, এরা সবাই ব্যবসায়ী। তাঁদের শো রুম বা দোকান আছে। খুব বড় শো রুম নয়, কিন্তু শো রুম। তারা অর্ডার করছেন, কারণ আমাদের পণ্যের দাম কম, আবার তার ও ৬০% লাভ তাঁরা পেয়ে যাবেন। তারপর তারা তা দোকানে বাজারের প্রচলিত মূল্যে বিক্রি করবেন। এতে তাদের অনেক বেশি লাভ হবে। আবার তাঁর সাথে পাচ্ছেন, আমাদের কাছ থেকে ৬০% লাভ। সোজা কথায় ডাবল লাভ। এভাবে আমাদের টার্গেট গ্রুপ নয়, অনেস্টের কারণে লাভবান হবেন তারা। এরপর আমরা একটা সার্ভে করলাম।মোটামুটি প্রফেশনাল সার্ভে। তাঁর রিপোর্ট আসলো, “ অনেস্ট একটা ‘ডিজাজস্টার’, আবার বলছি ‘ডিজাজস্টার’ হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে যাদের আপনি সাহায্য করতে চান, তাঁদের ক্রয় ক্ষমতা কম, তাই তাঁরা খুব একটা কিনবেন না, কিনবেন ব্যবসায়ী বা স্বচ্ছলরা। তাই ৬০% লাভ আপনার টার্গেট গ্রুপ পাবেন না। আপনারা সাহায্য নয়, সুবিধাপ্রাপ্তদের আরো সুবিধা দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন। নিজেদের টাকা খরচ করে এই বোকামী করার কোন মানে নাই। তারপর তারা যে সুপারিশ করলেন, তা হলো, আপনারা ৬০% লাভ ক্রেতাদের সরাসরি না দিয়ে তা সেন্ট্রাল একটা ফান্ডে রাখেন। ওয়েব সাইটে উম্মুক্ত হিসাব রাখেন কত লাভ হলো, যাতে যে কেউ তা পরীক্ষা করতে পারেন। তারপর তা পে ইট ফরোয়ার্ড এর মাধ্যমে অস্বচ্ছল ছাত্র-ছাত্রী বা যাদের দরকার তাদের দেন। ওয়েব সাইটে বলুন, লাভের টাকা কাকে কীভাবে দিলেন? যাতে কোন সন্দেহ না হয়। বছর শেষে নামকরা অডিট ফার্মকে দিয়ে হিসাব নীরিক্ষা করান, এবং তাও ওয়েব সাইটে দিন। তা হলে কেউ সন্দেহ করবেনা। এতে পে ইট ফরোয়ার্ড শক্তিশালী হবে, আপনারা আরো বেশি কাজ করতে পারবেন। আমরা এ রিপোর্ট অন্য বিশেষজ্ঞদের সাথে ক্রস ভেরিফিকেশন করলাম। তাঁরা সবাই এক মত। সবার কথা হচ্ছে, আপনি এক টাকা লাভ তো দুরের কথা, বিনিয়োগই ফেরত নেবেন না, এমন সব ভাল মানুষের টাকা ইনভেস্ট করে যাদের সুবিধা দিতে চাইছেন তাঁরা তা পাবেন না। পাবেন সুবিধাভোগীরা। এতে একসময় বিনিয়োগকারী মহৎ মানুষগুলো আপনার উপর আস্থা হারাবেন। কিন্তু লাভটা যদি পে ইট ফরোয়ার্ডের মাধ্যমে দেন, তবে তা আসল লোকের হাতে যাবে, যার এই সাহায্য খুব দরকার। আমি অনেক ভেবে দেখছি, তাঁদের কথায় যুক্তি আছে। তাই চিন্তা করছি একটা পোস্ট দিয়ে সবার মতামত নিব। যাদের জন্য এত কষ্ট, নিজের টাকা বিনিয়োগ, তারা উপকার না পেলে কী লাভ হলো??? বলে রাখা ভাল, আমাদের বিনিয়োগকারীরা কেউ ধনী নন, মধ্যবিত্ত। তাঁরা মহত্বের কারণে এমন কী এফ ডি আর এর বিপরিতে ঋণ নিয়ে বিনা স্বার্থে এ বিনিয়োগ করছেন। যাতে সুবিধা বঞ্চিতরা উপকার পান । তারা কিন্তু লাভ ত দুরের কথা, বিনিয়োগ ও ফেরত নেবেন না। তাঁদের স্বপ্ন হলো, অন্যের জন্য কিছু করা- আর কিছু নয়। আমরা তো চাই, অনেস্টের টাকায় অসংখ্য মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী পড়ুক, কারো পড়ার স্বপ্ন যেন নষ্ট না হয়। আমরা চাই, এ টাকায় একজন বিপন্ন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। আমরা চাই, একটি অসহায় পরিবার অনেস্টের টাকায় অবলম্বন খুঁজে পাক। আমাদের একটিই শ্লোগান– ওয়াট ক্যান আই গিভ।” (What can I give philosophy of Mr. A P J Kalam) যদি আমাদের টার্গেট গ্রুপ লাভবান না হয়ে সুযোগ সন্ধানীরা লাভবান হন তা হলে এটা করার কোন মানে হয় না. দয়া করে মতামত দিন। HONEST- আমার আপনার সবার প্রতিষ্ঠান।
তবে আম্রা প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রিয়ভাবে চ্যারিটিতে ব্যয় করবো। পে ইট ফরোয়ার্ডের মাধ্যমে। তারপর সক্ষমতা অর্জনের পর আমরা আমাদের মূল লক্ষ্য ‘ক্রেতাদের’ কাছে সরাসরি ৬০% লাভ পৌঁছে দেয়ার ধারায় ফিরে আসার চেষ্টা করবো